২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদল হবার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একমাত্র ভরসাযোগ্য পুলিশসুপার ভারতি ঘোষ কে তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ও ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিলেন। তারপর অনেক কিছু ঘটে গেছে যে তৃনমূল সরকার তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। তার স্বামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং জামিন অযোগ্য মামলা দেওয়া হয় তার বিরুদ্ধে। কিন্তু প্রাক্তন এই পুলিশসুপার এই সব কিছু চক্রান্তের বদলা নেবেন বলে জানিয়ে দিলেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিলেন যে ২০১৯ সালের আগে তিনি রাজনীতিতে নামবেন। এখন তিনি পুলিশ এর চোখে ফেরার এবং তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে। তার স্বামিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তিনি এক সংবাদ মাধ্যম কে জানিয়েছেন যে, আমার স্বামী নির্দোষ এবং তিনি একজন অত্যন্ত সৎ মানুষ। আমাদের রাজনৈতিক চক্রান্ত করে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যখন আমি তৃনমূলের নির্দেশ মেনে কাজ করতাম তখন আমি খুব ভালো অফিসার ছিলাম। কিন্তু যে দিন থেকে আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি।
সত্যিটা সবার সামনে তুলে ধরেছি সেদিন থেকে আমি তৃনমূলের চোখে দোষী হয়ে গেছি। তাই আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। কিন্তু আমি এটাও বলে রাখছি যে, এই সব কিছুর জবাব আমি দেব তৃনমূলকে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে তাকে পুলিশসুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি যেখানে দায়িত্ব পান সেখানে তার বিরুদ্ধে বিরোধীরা বারবার অভিযোগ এসেছে যে তিনি শাসক দল তৃনমূলের হয়ে কাজ করছেন। তাদের জন্য তিনি বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছেন। এমনকী তাঁর উপর থাকে ভোট পরিচালনা করার দায়িত্ব। এমনকি রাজ্য সরকার তার কাজে খুশি হয়ে তাকে একের পর এক পুরস্কারও দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন বিরোধীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতী ঘোষকে ২০১৪ এবং ১০১৬ সালে ভোটের আগে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন কিন্তু ভোট শেষ হতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাকে আবার নিজের দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হয়।
২০১৭ সালে মুকুল রায় যখন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি’তে যোগদান করলেন তারপর থেকে ভারতী ঘোষ ও তৃনমূলের মধ্যে সুসম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। ভারতী ঘোষ বলেন যে আমাকে মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ হিসাবে ওরা আমার উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। বিরোধী দলের ভোট বৃদ্ধির জন্য তৃনমূল আমাকে দায়ি করছে। সবং উপনির্বাচনের বিজেপি যাতে কম ভোট পায় সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাকে। আমাকে বলা হয় বিজেপির ভোট আটকানোর জন্য যেকোনো প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে কিন্তু আমি সেটা করিনি। তাই নিরাপত্তা হিনতার অভাবে আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
২০১৮ সালে ৩০ জানুয়ারি, ভারতী ঘোষ চিঠি লিখে জানান, তিনি পদত্যাগ করতে চান। তারপরই রাজ্য সরকার তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করতে থাকেন। তাঁর মেদিনীপুরের বাড়ি, তাঁর মাদুরদহের ও তাঁর বাঁশদ্রোণীর ফ্লাটে অভিযান চালিয়ে সোনার গয়না, ৫৭ টি বিদেশী দামী মদের বোতল, সহ প্রায় ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের জমির কাগজ, পেন ড্রাইভ, হার্ড ডিস্ক সহ প্রায় ৫ কোটি টাকা ক্যাশ উদ্ধার করে সিআইডি। কিন্তু এই প্রসঙ্গে ভারতী ঘোষ বলেন যে তিনি না থাকার সুবাধে তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে। সব চক্রান্তের আড়ালে সত্যি একদিন বাইরে বেরিয়ে আসবে বলে জানান তিনি। ভারতী ঘোষ এখন ফেরার। তিনি আত্মগোপন করে আছেন বলে জানা যাচ্ছে কিন্তু তিনি বলেন যে আমার আত্মগোপনের কোনো দরকার নেই। আমি শুধু অন্য রাজ্যে আছি। কিছু দিন পর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেলেই আবার ফিরে যাবো। কিন্তু কোন দলে যোগদান করবেন ভারতী ঘোষ?
বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায় এর সাথে তার সম্পর্ক ভালো থাকার সুবাদে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসকে শায়েস্তা করতে বিজেপিতে যোগদান করবেন বলেই শোনা যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে এক বিজেপি নেতা বলেন যে মুকুল রায় এবং ভারতী ঘোষ হল তৃনমূলের একদম ভিতরের লোক তৃনমূলের ব্যাপারে তাদের সব খুঁটি নাটি তথ্য জানা আছে। তাই ভারতী ঘোষকে বিজেপিতে সবসময় সুস্বাগত। কারন এরা তৃনমূল বিরোধী লড়ায়ে মুখ্য ভূমিকা নিতে পারে।
#অগ্নিপুত্র
The post তৃণমূলের উপর বদলা নিতে বিজেপিতে যোগ দেবেন ভারতী ঘোষ? appeared first on India Rag.
24 ghanta